জিয়া-এরশাদকে রাষ্ট্রপতি বলা বৈধ নয়: প্রধানমন্ত্রী

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট ॥ প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, আদালতের রায় অনুযায়ী সাবেক সেনাশাসক জিয়াউর রহমান এবং এইচ এম এরশাদের শাসনামল অবৈধ। এ দুজনের কাউকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করা বৈধ নয়। এই রায়ের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখার সুযোগ হয়েছে। তিনি বলেন, ১৯৮২ সালে এরশাদকে ক্ষমতা দখল করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা এইচ এম এরশাদের মৃত্যুতে রোববার জাতীয় সংসদে আনা শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এরশাদের মৃত্যুতে রোববার জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। পরে জাতীয় সংসদের রেওয়াজ অনুযায়ী চলমান সংসদের সদস্য এরশাদের মৃত্যুতে অধিবেশন মুলতবি করা হয়। আজ থেকে শুরু হয় একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশন। এ অধিবেশন চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।

শোক প্রস্তাবের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৮২ সালে এরশাদকে ক্ষমতা দখল করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। এ কারণেই তিনি খালেদা জিয়াকে শুধু দুটি বাড়িই নয়, নগদ ১০ লাখ টাকাসহ অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছিলেন। যে কারণে জিয়া হত্যার ঘটনায় করা মামলা বিএনপি চালায়নি। বহু বছর পর ১৯৯১ সালে বা এর পরে খালেদা জিয়া জেনারেল এরশাদকে তাঁর স্বামী হত্যার জন্য দায়ী করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৮১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন বিচারপতি সাত্তার। এরশাদ বলেছিলেন, সাত্তার তাঁর প্রার্থী। রাজনীতিতে না এলেও সে সময় খালেদা জিয়া হঠাৎ করে বিবৃতি দেন সাত্তারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদ থেকে বিদায় দেওয়ার জন্য।
জাতীয় পার্টির সাম্প্রতিক কাজের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় পার্টি বিরোধী দলে আসার পর গঠনমূলক সমালোচনা করেছে, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করেছে। গত ১০ বছরে সংসদের ওপর, গণতন্ত্রের ওপর মানুষের আস্থা ফিরে এসেছে। জাতীয় পার্টি সে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।
বিএনপিও নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদে যোগ দেওয়ায় দলটির সদস্যদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, শক্তিশালী বিরোধী দল ছাড়া গণতন্ত্র মজবুত হয় না। এখন গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। বিএনপি সংসদে আসে, আবার বলে জনগণ এই সরকারকে ভোট দেয়নি। ভোট না দিলে ১৯৯৬ সালের মতো জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি আন্দোলন করে সরকারকে উৎখাত করতে পারত। জনসমর্থন নেই বলে তারা তা পারছে না। জনগণ ভোট না দিলে ক্ষমতায় থাকা যায় না, তার প্রমাণ ১৯৯৬ সালে খালেদা জিয়ার নির্বাচন।
১৯৯১ সালে বিএনপির শাসনামলে এরশাদের জেল হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরশাদ ও রওশনকে বন্দী করে দিনের পর দিন অকথ্য নির্যাতন করা হয়। কারাগারের ভেতরও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানকে হেয় করা হয়েছে।
সমালোচনার পাশাপাশি এরশাদের ভালো কাজের প্রশংসাও করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জিয়া ক্ষমতায় এসে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেননি। এরশাদ সেটি করেছিলেন। স্মৃতিসৌধ ও শহীদ মিনারের কাজ এরশাদ শেষ করেছিলেন। ১৪ জন ছাত্রনেতার মৃত্যু পরোয়ানা ছিল, তাঁদের মুক্তি দিয়েছিলেন। ব্যক্তিজীবনে এরশাদ ছিলেন অমায়িক, মানুষের প্রতি তাঁর দরদ ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *