আকতারুল ইসলাম আকাশ,ভোলা সংবাদদাতা: ভোলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট কোম্পানির গাইড বই কিনতে বাধ্য করছেন শিক্ষকরা। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও নিম্মমানের গাইড বই সহায়ক পাঠ্যপুস্তুকের একটি তালিকা করে শিক্ষার্থীদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন। আর অভিভাবকরা কষ্ট হলেও ওইসব গাইড বই তাদের ছেলে-মেয়েদের কিনে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
জানা গেছে, সদর উপজেলায় জুনিয়র বিদ্যালয় মিলে প্রায় ৬৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় নিয়ে গঠিত হয়েছে শিক্ষক সমিতি।
সমিতির সভাপতি হচ্ছেন রতনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন তালুকদার আর সাধারণ সম্পাদক নলিনী দাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক অসীম শাহা।
তারা প্রতি বছরের মতো সুবিধা পেয়ে সদরের বিভিন্ন লাইব্রেরীর মালিকদের একাধিক কোম্পানির গাইড বই বিক্রির জন্য বলেন। বিনিময়ে ওই কোম্পানির সাথে তাদের একটি গোপন চুক্তি হয়। তারা লাভবান হয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে এসব গাইড বইয়ের তালিকা তুলে দেন।
অভিভাবকরা জানান, সরকার বিনামূল্যে বাংলা ইংরেজী গণিত ব্যাকারণ ও বিজ্ঞানসহ পাঠ্যসূচী অনুযায়ী সকল ধরনের বই জানুয়ারী মাসের প্রথমেই সকল শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিলেও বিদ্যালয় শিক্ষকদের চাপে সহায়ক বই হিসেবে তা কিনতে বাধ্য হন শিক্ষার্থীরা।
আর এসব গাইড বইগুলো কেনার জন্য শিক্ষকরাই লাইব্রেরীরর নাম পর্যন্ত বলে দিচ্ছে। সরকারের নিষিদ্ধ গাইড বইগুলো কিনে অভিভাবকরা হচ্ছেন সর্বশান্ত।
আনোয়ার মিঞা নামে এক অভিভাবক জানান, বহু কষ্ট করে ছেলের জন্য দুটি গাইড বই কিনেছি। এখনো চারটি গাইড বই কিনার বাকী রয়েছে।
এখন সরকার বিনা মূল্যে বই দিলেও ছেলের চাপের মুখে কিনতে হচ্ছে গাইড বই। দ্রুত এ গাইড বই বিক্রির বন্ধের দাবি জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদর লাইব্রেরির এক মালিক জানান, শিশির নামে ভোলা জেলার পাঞ্জেরির এক প্রতিনিধি বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকদের সাথে গোপন চুক্তি করে ডিসকাউন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সেই গাইড ক্রয় করতে বলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক নিষিদ্ধ গাইড বইয়ের প্রতিনিধি ও প্রধান শিক্ষকদের চুক্তির কথাটি স্বীকার করেন।
সমিতির সভাপতি জাকির হোসেন তালুকদারের সাথে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি পরে জানাবেন বলে মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন। তবে একাধিকবার সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জিহাদ হাসান জানান, শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদেরকে গাইড বই কিনার জন্য চাপ দিচ্ছেন সেই বিষয়টি সঠিক। তবে আমাদের সামনে শিক্ষার্থীরা ও শিক্ষকরা এই বিষয়টি অস্বীকার করেন। আমরা অতি দ্রুত বিষয়টি খতিয়ে দেখব।