সুর সম্রাট আলাউদ্দিন আলী নেই

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক: না ফেরার দেশে চলে গেলেন বিশিষ্ট সংগীত পরিচালক ও সুরকার আলাউদ্দিন আলী (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রোববার (০৯ আগস্ট) রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিকেল ৫টা ৫০মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।

আলাউদ্দিন আলীর মৃত্যুর তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে আলিফ আলাউদ্দিন ও ঘনিষ্ঠজন মোমিন বিশ্বাস।

এর আগে শনিবার (০৮ আগস্ট) ভোরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তার শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ায় ও তীব্র শ্বাসকষ্ট থাকায় লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

আলাউদ্দীন আলী একাধারে একজন সঙ্গীত পরিচালক, সুরকার, বেহালাবাদক ও গীতিকার। ১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর পুরোনো ঢাকায় তার জন্ম। তার বাবা ওস্তাদ জাদব আলী। আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী সংগীত পরিচালক আলাউদ্দীন আলী দীর্ঘ মিউজিক ক্যারিয়ারে প্রায় তিন শতাধিক চলচ্চিত্রের গানে সুর দিয়েছেন।

দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিলতায় ভুগছেন আলাউদ্দিন আলী। ২০১৫ সালে তাকে চিকিৎসার জন্য ব্যাংকক নেওয়া হলে জানা যায়, তার ফুসফুসে একটি টিউমার রয়েছে। এরপর তার অন্যান্য শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি ক্যান্সারের চিকিৎসাও চলে।

গত বছর ২২ জানুয়ারি অসুস্থ আলাউদ্দীন আলীকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে দুই মাসের বেশি সময় ধরে চিকিৎসায় তিনি প্রায় সুস্থ হয়ে উঠেন। এরপর একই বছর এপ্রিল মাসে শ্বাসনালী ও পাজরের বাঁ পাশে নিস্তেজসহ নানা রোগে আক্রান্ত অবস্থায় সাভারের সিআরপি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গুণী এই সংগীত পরিচালকে। সেখানে দীর্ঘ তিন মাস চিকিৎসা নেওয়ার অনেকটা সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরেন তিনি।

১৯৬৮ সালে তিনি যন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে আসেন এবং আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে যোগ দেন। এরপর তিনি প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজসহ বিভিন্ন সুরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭৫ সালে সংগীত পরিচালনা করে বেশ প্রশংসিত হন।

‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’ ও ‘যোগাযোগ’ চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৮৮ সালে শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৫ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে।

অসংখ্য কালজয়ী গানের সংগীত পরিচালক ছিলেন আলাউদ্দিন আলী। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য- ‘একবার যদি কেউ ভালোবাসতো’, ‘যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়’, ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’, ‘ভালোবাসা যতো বড়ো জীবন তত বড় নয়’, ‘দুঃখ ভালোবেসে প্রেমের খেলা খেলতে হয়’, ‘আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার’, ‘সূর্যোদয়ে তুমি’, ‘সূর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ’, ‘বন্ধু তিন দিন তোর বাড়ি গেলাম দেখা পাইলাম না’, ‘যেটুকু সময় তুমি থাকো কাছে’, ‘এমনও তো প্রেম হয়’, ‘চোখের জলে কথা কয়’, ‘কেউ কোনো দিন আমারে তো কথা দিল না’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’ ‘এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাই’ ইত্যাদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *