নাগরিক রিপোর্ট: শৃংখলা ভঙ্গে তৃনমুল কমিটি বিলুপ্ত করতে গিয়ে বরিশাল জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃত্বেই চরম বিশৃংখলার অভিযোগ উঠেছে। দলটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতিকে পাশ কাটিয়ে সম্পাদক নিজেই এককভাবে নানা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক শহিদুল আলম মনির মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা ও পৌর কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করলে এর বিরোধীতা করেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জগলুল হায়দার শাহিন। তার দাবী সম্পাদক মনিরের সাংগঠনিক জ্ঞানের অভাব থাকায় একক সিদ্ধান্তে কমিটি বিলুপ্ত করার বৈধতা নেই।
জানা গেছে, সোমবার বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা ও মেহেন্দিগঞ্জ পৌর কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে একই উপজেলার উলানিয়া ও চানপুরা ইউনিয়নের কার্যকরী কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করার পাশাপাশি ইউপি নির্বাচনে আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় উলানিয়া সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম চৌধুরী মিঠুসহ ৫ জনকে বহিস্কারের উল্লেখ করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের বরিশাল জেলা সাধারন সম্পাদক শহিদুল আলম মনির সাক্ষরিত ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে তা অবৈধ বলে জানিয়েছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জগলুল হায়দার শাহিন।
তিনি বলেন, মেহেন্দীগঞ্জের কোন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করা হয়নি। সাধারন সম্পাদক একক ভাবে কোন কমিটি বিলুপ্ত কিংবা কাউকে বহিস্কার করতে পারে না। এমন ঘটনা তাকে জানানোও হয়নি। তিনি বলেন, সাধারন সম্পাদক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদককে বাদ দেয়ার মত অসাংগঠনিক কথা বলছেন। তার সাংগঠনিক জ্ঞানর অভাব আছে। মেহেন্দীগঞ্জের সকল কমিটি বৈধ। এটি মনগরা প্রেসরিলিজ।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জগলুল হায়দার শাহিন আরও বলেন, তার দলের সভাপতি মনির হোসেন মারা যাওয়ার পর প্রায় ১ যুগ আগে কেন্দ্রীয় সভাপতি বাহাউদ্দিন নাসিম ও সাধারন সম্পাদক পংকজ নাথ সাক্ষরিত পত্রে তাকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়েছে। অথচ সম্পাদক কি করে সভাপতিকে বাদ দেয়ার কথা বলে। তিনি বলেন, সম্পাদক মনির নানা অসাংগঠনিক কর্মকান্ড করছে। এই প্রেস রিলজের কোন বৈধতা নেই। কেন্দ্র থেকে মেহেন্দীগঞ্জের কমিটি বিলুপ্তর কোন নির্দেশনাও দেয়নি। তিনি বলেন, সম্পাদক মনিরের সাথে কেউ নেই। তিনি গোটা সংগঠনের কার্যক্রম জিম্মি করে দলীয় কোন্দল সৃস্টি করছে।
এ প্রসঙ্গে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক রাম কৃষ্ণ নাথ বলেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগেই সমন্বয় নেই। তারা কতটা অসাংগঠনিক তা নেতাকর্মীরা জানেন। তিনি বলেন, কারন দর্শানো ছাড়াই কমিটি বিলুপ্ত করা অসাংগঠনিক। তাছাড়া সভাপতি-সম্পাদকের যৌথ সাক্ষর ছাড়া কিভাবে কমিটি বিলূপ্ত করা হয়।
তবে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক শহিদুল আলম মনির বলেন, মেহেন্দীগঞ্জ পৌর ও উপজেলা কমিটি কাউন্সিলে ভিন্নভাবে গেছে। তাদের কমিটির অনুমোদনও নেই। তাই রোববার দলের সভা করে সোমবার কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জগলুল হায়দার শাহিন এর মতামত নেয়া হয়েছিল কিনা এ প্রসঙ্গে মনির বলেন, তাকে (ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) বাদ দেয়া হয়েছে। নেতাকর্মীরা তাকে চায় না। তিনি কর্মসুচীতেও আসেন না।
এব্যাপারে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক অ্যাড. মঞ্জু বলেন, কোন কমিটি বিলুপ্ত করা হলে দলের সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত থাকতে হবে। তার জানা মতে, এ ধরনের কোন সভাই হয়নি। তাছাড়া ভারপ্রাপ্ত সভাপতির সাক্ষর ছাড়া কমিটি বিলুপ্ত করা যায় না। তিনি বলেন, সভাপতিকে কেন্দ্র ছাড়া বাদ দেয়া সম্ভব নয়। জগলুল হায়দার শাহিনই স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। দলে শৃংখলা না থাকায় এমন অসাংগঠনিক কর্মকান্ড ঘটছে।