‘মৎস্যসম্পদ ও জেলেদের জীবনামানোন্নয়নে প্রধান বাঁধা চেয়ারম্যান-মেম্বররা’

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : দেশের মৎস্যসম্পদ বৃদ্ধি এবং জেলেদের জীবনমান বৃদ্ধিতে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন উপকূলের প্রান্তিক জনপ্রতিনিধিরা। ইলিশসহ অন্যান্য মাছের প্রজনন সময়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ আহোরনে মুল মদদদাতা থাকেন নদীর তীরের চেয়ারম্যান-মেম্বররা। তারা নদীতে মাছ ধরে সুপারী গাছের আড়ালে বিক্রি করেন। আবার জেলেদের খাদ্য সহায়তা বিতরণেও নয়-ছয় করেন ওই চেয়ারম্যান-মেম্বররা। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে নতুন করে জেলে তালিকা তৈরী এবং খাদ্যসহায়তা বিতরনের ক্ষমতা চেয়ারম্যান-মেম্বরদের বাদ দিয়ে মৎস্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রনে আনতে হবে। বরিশালে অনুষ্ঠিত “প্রজননক্ষম ইলিশ রক্ষায় জেলে প্রতিনিধিদের করণীয়” শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় জেলে প্রতিনিধিরা এ মতামত দেন।
রোববার বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতি। সংগঠনের সভাপতি ইসরাইল পন্ডিতের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপ পরিচালক মো. আনিসুর রহমান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান। বিভাগের ছয় জেলার জেলে প্রতিনিধিরা মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।
জেলেরা বলেন, জেলের তালিকা তৈরী বং খাদ্য সহায়তা বিতরণের দায়িত্ব চেয়ারম্যানরা পাওয়ায় তারা এটাকে ভোট ব্যাংক হিসাবে ব্যবহার করছেন। তারা পছন্দের লোককে জেলে তালিকাভুক্ত এবং খাদ্য সহায়তা দেন। খাদ্য সহায়তা পেতে জেলেদের কাছ থেকে ২০০-৩০০ টাকা করে ঘুষ নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। আবার চাল দেয়া হয় ৫ থেকে ১০ কেজি কম।
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার জেলে প্রতিনিধি ধলা মাঝি বলেন, তাদের এলাকায় নদীতে মাছ ধরার জন্য কোষ্টগার্ডের দুই-তিনটি ইউনিট ও নৌ পুলিশকে নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়।
ক্ষদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন সিকদার বলেন, বর্তমান তালিকাভূক্ত জেলেদের অর্ধেকের বেশী প্রকৃত জেলে নন। ইউপি চেয়ারম্যানরা ভোট ব্যাংক মজবুত করার জন্য তাদের তালিকাভুূক্ত করে খাদ্য সহায়তা দেয়ায় বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত জেলেরা। এ তালিকা দ্রুত সংশোধন করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় অংশনেয়া বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান সবুজ একই মত দিয়ে বলেন, জেলেদের খাদ্য সহায়তা গোডাউন থেকে ইউপি ভবন পর্যন্ত পৌছাতে খুব সামান্য পরিবহন খরচ দেয়া হয়। এ কারনে কিছু চেয়ারম্যান কম পরিমান চাল বিতরন করে পরিবহন খরচ তোলার কৌশল নেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জেলেদের আরও সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মৎস্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন কমিটিতে জেলে প্রতিনিধি থাকে মাত্র ২ জন। যে কারনে ওইসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠার জোরে তাদের মতামতের প্রতিফলন হয়না।
বিভাগীয় উপ পরিচালক মো. আনিসুর রহমান বলেন, খাদ্য সহায়তা বন্টনে মৎস্য অধিদপ্তরে নিজস্ব কোন নীতিমালা নেই। অন্য দপ্তরের ভিজিএফ নীতিমালার ওপর তাদের চলতে হয়। আর এসুযোগটি নিচ্ছেন প্রান্তিক পর্যায়ের জনপ্রতিধিরা।##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *