নাগরিক রিপোর্ট : একটি মামলায় একবছর সাজা ভোগ করে সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছেন বরিশাল নগরীর আলেকান্দা কাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা জেসমিন আক্তার (৪০)। দুই সন্তানের জননী জেসমিন আক্তারের স্বামী ফারুক আলম অসুস্থতার কারনে বেকার। স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে জীবনযাপনে বড় অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলেন জেসমিন। এ অবস্থায় জেসমিনকে সেলাই মেশিন দেয়া হয়েছে উপর্জনের পথ তৈরী করে নেয়ার জন্য।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর জেসমিন আক্তার জেল থেকে মুক্তি পান। কারামুক্ত হলেও অভাব তার পিছু ছাড়েনি। দুই শিশু সন্তান নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে কাটছিল দিন। কারাগারে থাকা অবস্থায় অপরাধি ও পুনর্বাসন সমিতির মাধ্যমে সেলাইয়ের কাজ শিখেছিল জেসমিন। জীবনযাপন নিয়ে জেসমিন যখন হাবুডুবু খাচ্ছিলেন তখন তাকে স্বাবলম্বী করতে পাশে দাড়িয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তরের জাতীয় সমাজকল্যান পরিষদ। সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের সক্সেমলন কক্ষে আয়োজিত অনারম্বর এক অনুষ্ঠানে জেসমিন আক্তারের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেন বরিশালের জেলা প্রশাসক ও জাতীয় সমাজকল্যান পরিষদের জেলা সভাপতি মো. জসীম উদ্দীন হায়দার।
একই অনুষ্ঠানে চারমাস হাজত খেটে বের হওয়া বাকেরগঞ্জ উপজেলা ভোজমহল গ্রামের নুরনাহার বেগম (৪৫) এবং পিতৃহীন শিক্ষার্থী সুমি আক্তারকেও সেলাই মেশিণ দেয়া হয়।
সেলাই মেশিন পেয়ে জেসমিন আক্তার বলেন, ‘মোরা খুব অভাবে পড়ছিলাম। জেলে থাকতে সেলাইর কাম শিখছি, মেশিণডা পাইয়া আমি খুব খুশি। এহন কাম-কাজ কইরা খাইতে পারমু, পোলা দুইডারে স্কুলে দিমু’।
প্রতিবেশীর দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হয়ে চারমাস হাজতে ছিলেন বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভোজমহল গ্রামের নুরনাহার বেগম। সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন তিনি। স্বামী আব্দুল মালেক দিনমজুর। তিন সন্তান নিয়ে নুরুন্নাহার-মালেক দম্পতির জীবনযাপনে দারুন টানাটানি চলছে। কারাগারে থেকে নুরুন্নাহারও সেলাই’র কাজ শিখেছিলেন। তাকেও দেয়া হয়েছে সেলাই মেশিন।
নুরুন্নাহার বলেন, ‘সেলাই মেশিণডা দিয়া মুই ভালভাবে বাইচ্চা থাকতে পারমু’।
মা ও তিন বোন নিয়ে চরবাড়িয়ার আশ্রায়ন প্রকল্পে পাওয়া ঘরে থাকেন সরকারি ব্রজমোহন কলেজের মাষ্টার্সের শিক্ষার্থী সুমি আক্তার। তার বাবা আবুল হোসেন ৫ বছর আগে মারা গেছেন। বরিশাল সমাজকল্যান অধিদপ্তরে সহযোগীতা চাওয়ায় সুমিকেও সেলাই মেশিণ দেয়া হয়েছে।
সেলাই মেশিণ প্রদান অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আল মামুন তালুকদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) প্রশান্ত কুমার দাস ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ।##
২০২১-১০-১২