মুরগি পালন করে স্বাবলম্বী বজলুর

Spread the love

জাকির হোসেন (আমতলী) : আমতলীর কাঁঠালিয়া গ্রামের এক সময়ের বেকার অভাবী যুবক বজলুর রহমান খান মুরগি পালন করে এখন স্বাবলম্বী।  তার দেখা দেখি এই গ্রামে অনেকেই এখন মুরগি পালন করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের বারেক খানের ছেলে বজলুর রহমান খান। বিএপাস করে চাকুরির জন্য বিভিন্ন দপ্তরে ঘোরাঘুরি করে কোন চাকুরি না পেয়ে হতাস জীবন যাপন করছিলেন। তখন তার সামনে আশার আলো হয়ে ছুটে আসে যুব ইন্নয়ন অধিদপ্তরের মাঠ কর্মী মো. সাইফুল ইসলাম। সাইফুল ইসলামের সাথে দেখা হয় নিজ গ্রাম কাঁঠালিয়ায়। দেখার পর আলাপ চারিতায় সে তাকে হাঁসমুরগি পালনের উপর যুবউন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহনের জন্য আহবান করেন। সাইফুল ইসলামরে পরামর্শে ২০১৫ সালে বজলু রহমান খান যুবউন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে আড়াই মাস মেয়াদি হাঁস মুরগী প্রতিপালন বুনিয়াদি একটি প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন।

প্রশিক্ষণ শেষে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর আমতলী অফিস থেকে বজলুর রহমানকে ৬০ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়। এই ঋণের টাকা নিয়ে বজলু নিজ বাড়িতে ঘড় তৈরী করে ৪৬ হাজার টাকার সোনালী মুরগীর বাচ্চা কিনে মুরগি পালন শুরু করেন। প্রথম বারেই তিনি ১০ হাজার টাকা লাভ করেন। এর পর বজলুর রহমানের আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। মাত্র ৭ বছরে মুরগি পালন করে বজলু এখন লাখ পতি বনে গেছেন। তার বাড়িতে রয়েছে কয়েক লক্ষ টাকার মুরগী, পুকুর ভর্তি মাছ আর গোয়াল ভরা গরু। বন্ধক রেখেছেন ৬ বিঘা জমি। মুরগীর খামার বড় করার জন্য মে মাসে ১২ লক্ষ টাকা ব্যায়ে খান বাড়ী পল্ট্রি সেবা প্রকল্প চালু করেছেন। শূন্য থেকে শুরু করে বজলু খান নিজের শ্রম এবং ঘামে যুব উন্নয়ন অফিসের পরামর্শে এখন যেন কাঠালিয়া গ্রামের এক বড় খামারীতে পরিনত হয়েছে। মালিক হয়েছে অর্ধ কোটি টাকার। সমাজে বেড়েছে তার প্রভাব প্রতিপত্তি। সবাই যেন এখন এক নামে তাকে চিনে।

শুক্রবার সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় একসময়ের ভবঘুরে শূন্য চালানের বজলুর রহমান খান এখন তার বাড়ী জুরে বিশাল মুরগীর খামার তৈরী করেছেন। খামারে হাজার হাজার মুরগী রয়েছে। গোয়াল ঘরে রয়েছে গরু, পুকুর ভর্তি রয়েছে মাছ। বন্ধক রেখেছেন ৬ বিঘা জমি। এ যেন আলাদিনের চেরাগ পাওয়ার রুপ কথার গল্পের মত রাতারাতি পাল্টে যাওয়া।

বজলু খান বলেন, বিএ পাস করে ভবঘুরে জীবন যাপন করতাম। টাকা বলতে কিছু ছিল না। যুব উন্নয় অধিদপ্তর থেকে হাঁসমুরগী প্রতিপালনের উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে মাত্র ৬০ হাজার টাকা ঋন নিয়ে মুরগী পালন শুরু করি। এখন আমি বাড়ীতে খান বাড়ী পল্ট্রি সেবা প্রকল্প নামে বিশাল আকারে মুরগির ফার্ম গরে তুলেছি। আমার দেখা দেখি এই গ্রামে অনেকেই এখন মুরগি পালন শুরু করেছে। আমার এখন আর কোন অভাব নেই।

আমতলী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সৈয়দ মো. ফারুক হোসেন বলেন, বজলুর রহমান একজন আদর্শ খামারী। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহন করার পর আমাদের অফিস থেকে ৬০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে মুরগী পালন শুরু করে। এখন সে অর্ধ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। এটা আমাদের জন্য অত্যান্ত গর্বের। আমি আশা করি বেকার যুবকরা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ গ্রহন করে এভাবে হাসমুরগী কিংবা পশু পালন করে স্বাবলম্বী হতে পারেন।#

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *