হামলায় আহতকে হাসপাতালে নিতেও বাঁধা এমপি পংকজের সন্ত্রাসীদের

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামীগের অভ্যন্তরীন বিরোধের জেরে শুক্রবার রাত ১১টায় প্রতিপক্ষ গ্রুপের হামলায় ২জন আহত হয়েছেন। হামলার পর আহতদের বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপতালে আনা বাঁধাগ্রস্থ করতে স্পীডবোট চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথের অনুসারীরা হামলা ও স্পীডবোট চলাচল বন্ধ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন এমপি বিরোধী আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা। এতে উপজেলা প্রশাসন ক্ষুদ্ধ হয়ে শনিবার সকাল থেকে স্পীডবোট চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। প্রসঙ্গত, মেঘনাবেষ্টিত মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে বরিশালের সড়ক যোগাযোগ নেই।

মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম এসব তথ্যের স্বীকার করে বলেন, এমপি পংকজ দেবনাথের সমর্থকরা শুক্রবার রাত ১১টার দিকে পৌর শহরের কালিকাপুর রমিজ উদ্দিন স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে উলানিয়া বাজারের ব্যবসায়ী নিজাম ও তার সহযোগী মান্নান মাঝিকে বেদম পিটিয়ে আহত করেছে। ওই দুজন পৌর শহরের পাতারহাট বন্দরে ব্যবসায়ীক কাজ শেষে মোটরসাইকেলে উলানিয়াতে ফিরছিলেন। পুলিশ হামলাকারীদের শনাক্ত করেছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নেজাম ও তার সহযোগী মান্নান পাতারহাট বন্দর থেকে মোটরসাইকেলে উলানিয়া ফেরার সময় এমপি পংকজের সমর্থকরা ৮-১০টি মোটরসাইকেলে তার পিছু নেয়। কালিকাপুর নামক স্থানে পৌছার পর গেতিরোধ করে তাদের লোহাররড দিয়ে বেদম পেটানো হয়।
নেজামের নিকটত্মীয় উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জামাল উদ্দিন মোল্লা বলেন, নেজাম দক্ষিণ উলানিয়া আওয়ামীলীগের যুগ্ন আহ্বায়ক। হামলায় তার দুটি হাত ও একটি পা ভেঙ্গে গেছে। শনিবার সন্ধা পর্যন্ত তিনি বরিশাল মেডিকেলে আছেন। তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

ওসি শফিকুল জানান, হামলার পর আহত নেজাম ও মান্নানকে প্রথমে উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা খারাপ হওয়ায় চিকিৎসকরা নেজামকে দ্রুত দ্রুত বরিশাল মেডিকেলে নেয়ার পরমর্শ দেন। স্বজনরা তাকে নিয়ে স্পীডভোটঘাটে গিয়ে দেখেন চালকরা মোবাইল বন্ধ করে গাঁ ঢাকা দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও তিনি (ওসি) অনেক চেষ্টা করেও একটি স্পীডবোট ম্যানেজ করতে পারেননি। পরে ১৫ মাইল দুরে উলানিয়াতে গিয়ে সেখান থেকে স্পীডবোটে আহত নেজামকে বরিশালে নেয়া হয়।

মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র কামাল উদ্দিন খান জানান, ভোলা থেকে একটি স্পীটবোট উলানিয়াতে আনিয়ে রাত ৩টায় নেজামকে নিয়ে বরিশাল মেডিকেলে রওনা হন স্বজনরা। তিনি এ ঘটনার এমপি পংকজ সমর্থকদের দায়ী করেন।

ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, পাতারহাটে অনুমোদনহীন স্পীডবোট ঘাট পরিচালনা করেন এমপির সমর্থক পৌর কাউন্সিলর মনির জমাদ্দার। ধারনা করা হচ্ছে তার নির্দেশেই চালকরা গা ঢাকা দিয়েছিলেন। ওসি বলেন স্পীটবোটে যাত্রী পরিবহন নিষিদ্ধ হলেও মানুষের প্রয়োজন বিবেচনা করে প্রশাসন বাঁধা দেয়নি। যখন একজন মুমুর্ষ রোগীর জন্য স্পীডবোট পাওয়া যায়না, তাই ইউএনওর নির্দেশে শনিবার সকাল থেকে পুলিশ অবৈধ স্পীডবোট চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।

এমপি পংকজের সমর্থক উপজেলা আওযামীলীগের সহ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ভুলুর কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছুই জানেন না বলে সমকালের কাছে দাবী করেন।

স্পীডবোটঘাটের পরিচালক পৌর কাউন্সিলর মনির জমাদ্দার বলেন, তিনি উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি। এমপি পংকজকে সমর্থন করায় ওসি শফিকুল ইসলাম শনিবার স্পীডবোট বন্ধ করে দিয়েছেন। শুক্রবার রাতে বোট চালকরা ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। কেউ তার (মনির) সঙ্গেও যোগাযোগ করেননি। দুজনের ওপর হামলা প্রসঙ্গে কাউন্সিলর মনির বলেন, এমপির বিরোধীকারীরাও দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। একপক্ষ আরেকপক্ষের মাছঘাট দখল করার জন্য ওসি শফিকুল ইসলামকে টাকা ও ইলিশ মাছ দিয়ে ফেরার সময় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হন নেজাম ও মান্নান।##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *